Mar 26, 2008

তালিকা : ১০১ - ১১০

১০১। নং- ৬১/এসবি (৩) ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

জোয়াদ হোসেন

পিতা: জহির আহমেদ

হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা

১০২। নং-৬২/এসবি (৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

জাফর আলী ওরফে এস, এম, জাফর

পিতা: গোলাম দস্তগীর

হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১০৩। নং- ৬৩/এসবি (৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

আখতার মল্লিক ওরফে আখতার ইসলাম

পিতা: আব্দুল হামিদ

হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১০৪। নং- ৬৪/ এস বি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

এম, এন, ইমাম

পিতা: এম, এম, ইমাম

হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১০৫। নং- ৬৫/ এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

মেজর রিজভী ওরফে মেজর এ, জি, রিজভী, সিকিউরিটি অফিসার,

সি এন্ড পি, টি, জেলা- চট্টগ্রাম।

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১০৬। নং- ৮৫/ এসবি(৩), ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২

নজীর

পিতা: ইসমাইল আলী

গ্রাম- পদনাপুর, থানা- বিশ্বনাথ, জেলা- সিলেট

আদাল- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রট, সদর সিলেট

হাজিরার দিন- ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১০৭। নং- ৮৬/ এসবি(৩), ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২

আব্দুল হাশিম ওরফে হাশিম

পিতা: জহুর আলী

গ্রাম- পদনাপুর, থানা- বিশ্বনাথ, জেলা- সিলেট

আদাল- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রট, সদর সিলেট

হাজিরার দিন- ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১০৮। নং- ৮৭/ এসবি(৩), ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২

আব্দুল গণি

পিতা: জহুর আলী

গ্রাম- পদনাপুর, থানা- বিশ্বনাথ, জেলা- সিলেট

আদাল- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রট, সদর সিলেট

হাজিরার দিন- ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১০৯। নং- ৬৭/ এসবি (৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

সৈয়দ আবুল হাসানাত

পিতা: মৃত ফয়জুদ্দীন

সি, জি, এস, কলোনী, আগ্রাবাদ, থানা ডবল মুরিং, জেলা- চট্টগ্রাম

আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর) চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১১০। নং- ৬৭/ এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

শাকিল আহমেদ ওরফে বাবুল

পিতা: রফিক আহমেদ খান

কোয়ার্টার নং- ৪/৮, সি, জি, এ কলোনী, আগ্রাবাদ, থানা- ডবল মুরিং

জেলা- চট্টগ্রাম

আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর) চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা

Mar 25, 2008

তালিকা : ৯১ - ১০০

৯১। নং: ৫১/এসবি (৩) ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

মো: আইয়ুব খান

পিতা: মৃত ইয়াকুব খান

গ্রাম: বারমাপুল্লি, থানা: কোতয়ালী, ময়মনসিংহ এবং

টাউন হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯২। নং: ৫২/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

মো: ইউনুস

পিতা: শেখ তোজাম্মুল

রেলওয়ে কোয়ার্টার, নং: জে/১৫৬, দেবরপুর,

থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯৩। নং: ৫৩/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

মোক্তার আহমেদ

পিতা: মুন্সী ইলাহী বক্স

কোয়ার্টার নং: এল/১৭, সাহেবপাড়া, থানা: লালমনিরহাট, জেলা: রংপুর

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯৪। নং: ৫৪/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

সৈয়দ গোলাম গাউস

পিতা: সৈয়দ মনিরুদ্দীন

রেলওয়ে কোয়ার্টার নং ৭৭৫(বি), টিকেট প্রিন্টিং কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯৫। নং: ৫৫/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

ফরাসুদ্দীন

পিতা: গোলাম দস্তগীর,

হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯৬। নং: ৫৬/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

মতি আহমেদ খান

পিতা: ওলি আহমেদ খান

হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯৭। নং: ৫৭/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

ফজুল আহমেদ খান ওরফে ফজুল

পিতা: মোহাম্মদ আলী

গ্রাম: মধ্য হালিশহর, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯৮। নং: ৫৮/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

এম, এ, খান ওরফে মাহমুদ আলাম খান

পিতা: নজীর খান

হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯৯। নং: ৫৯/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

মো: ইয়াসিন শরীফ

পিতা: আব্দুল ওয়াহাব শরীফ

কোয়ার্টার নং: ২১, রোড: এ, হালিশহর হাউজিং এস্টেট,

থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


১০০। নং: ৬০/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

জোয়াদ হোসেন

পিতা: জহির আহমেদ

হালিশহর কলোনী, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা

তালিকা : ৮১ - ৯০

৮১। নং: ১০৫৫ রাজ(৪), ৩০ জুন, ১৯৭২

আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া

পিতা: মোবাদ আলি মিয়া

গ্রাম- লোকনাথপুর, থানা- দামুরহুদা, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।

৮২। নং: ১০৫৬ রাজ (৪), ৩০ জুন ১৯৭২

আবু সাইদ ওরফে ইলু

পিতা: ইসমাইল

গ্রাম- লোকনাথপুর, থানা- দামুরহুদা, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৮৩। নং: ১০৫৭ রাজ(৪), ৩০ জুন ১৯৭২

সোলেমান

পিতা: তোয়াক্কেল আলী

গ্রাম- লোকনাথপুর, থানা- দামুরহুদা, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।

৮৪। নং: ১০৫৮ রাজ(৪০), ৩০ জুন, ১৯৭২

ইয়াজরাত

পিতা: মৃত তোয়াক্কেল

গ্রাম- লোকনাথপুর, থানা- দামুরহুদা, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৮৫। নং: ১০৫৯ রাজ(৪), ৩০ জুন, ১৯৭২

আব্দুল সাত্তার

পিতা: ইউনুস আলী

গ্রাম- লোকনাথপুর, থানা- দামুরহুদা, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৮৬। নং ১০৬০, রাজ (৪), ৩০ জুন ১৯৭২

আব্দুল জলিল

পিতা: অক্কেল মন্দাল

গ্রাম- লোকনাথপুর, থানা- দামুরহুদা, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৮৭। নং: ৪৭/এস বি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

শাহজাহান

পিতা: আব্দুল খান মিস্তরী

গ্রাম: সেগুন বাগান, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৮৮। নং: ৪৮/এসবি (৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

আলী আকবর ওরফে গামা (ফিটার, সি,ই,ই)

পিতা: আমির খান ওরফে নওয়াব খান

গ্রাম: সেগুন বাগান, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৮৯। নং: ৪৯/এসবি (৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

আসলাম

পিতা: রেজাউদ্দীন

গ্রাম: সেগুন বাগান, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা


৯০। নং: ৫০/এসবি(৩), ৩০ আগস্ট, ১৯৭২

আলী আহমেদ

পিতা: আমির খান ওরফে নওয়াব খান

গ্রাম: সেগুন বাগান, থানা: ডবল মুরিং, জেলা: চট্টগ্রাম

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর (উত্তর), চট্টগ্রাম

হাজিরার দিন- ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭২, বেলা ৩টা

Mar 18, 2008

তালিকা : ৭১ - ৮০

৭১। নং- ১০৪৪, রাজ(৪)- ৩০ জুন ১৯৭২

শরাফুদ্দিন ওরফে শরফু

পিতা: মৃত আবুল হোসেন

ঠিকানা: স্টেশন রোড, কুষ্টিয়া শহর, থানা- কুষ্টিয়া, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।

৭২। নং- ১০৪৫ রাজ(৪)- ৩০ জুন ১৯৭২

সিরাজ শেখ

পিতা: শরফু ওরফে শরফুদ্দিন

ঠিকানা: রাজীব আলী খান চৌধুরী লেন, মিলপাড়া

থানা: কুষ্টিয়া, জেলা: কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৭৩। নং ১০৪৬ রাজ(৪) ৩০ জুন ১৯৭২

শামসুল

পিতা: মৃত নবী বক্স

ঠিকানা: নবী বক্স লেন, থানা: কুষ্টিয়া, জেলা: কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৭৪। নং- ১০৪৭, রাজ(৪) ৩০ জুন ১৯৭২

ফেকা কাসাই ওরফে সাহেবজান বিহারী

পিতা: মৃত মো: এদন

ঠিকানা: পি. সি. রয় রোড, আড়ুয়াপাড়া, থানা: কুষ্টিয়া, জেলা: কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৭৫। নং- ১০৪৮, রাজ(৪) ৩০ জুন, ১৯৭২

জামিল বিহারী

পিতা: মৃত মাহবুবুর রহমান

ঠিকানা আড়ুয়াপাড়া, কুষ্টিয়া শহর, থানা: কুষ্টিয়া, জেলা: কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৭৬। নং ১০৪৯, রাজ(৪), ৩০ জুন, ১৯৭২

মজিদ বিহারী

পিতা: মৃত ফাতেহ মোহাম্মদ

ঠিকানা: আড়ুয়া পাড়া, কুষ্টিয়া শহর, থানা: কুষ্টিয়া, জেলা: কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৭৭। নং ১০৫০, রাজ(৪) ৩০ জুন, ১৯৭২

আহমেদ বিহারী

পিতা: মৃত ফাতেহ মোহাম্মদ

ঠিকানা: আড়ুয়া পাড়া, কুষ্টিয়া শহর, থানা: কুষ্টিয়া, জেলা: কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৭৮। নং ১০৫১, রাজ(৪), ৩০ জুন, ১৯৭২

আহমেদ আলী

পিতা: মৃত আলী হোসেন

ঠিকানা: পোড়াদহ, বর্তমান ষ্টেশন রোড, কুষ্টিয়া শহর, থানা মিরপুর, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৭৯। নং ১০৫২, রাজ(৪) ৩০ জুন, ১৯৭২

কাশেম

পিতা: মৃত মঙ্গলী মিয়া

ঠিকানা: রাজীব আলী খান চৌধুরী স্ট্রিট, কুষ্টিয়া শহর, থানা: কুষ্টিয়া, জেলা: কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।


৮০। নং ১০৫৪, রাজ(৪), ৩০ জুন, ১৯৭২

আব্দুল ওয়াদুদ সাহা

পিতা: মৃত কাশেদ আলী সাহা

গ্রাম- লোকনাথপুর, থানা- দামুরহুদা, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।

Mar 17, 2008

তালিকা : ৬১ - ৭০

৬১। নং ১০০৯ রাজ (৪) ২৭ জুন ১৯৭২

আব্দুল খালেক

পিতা: আব্দুল মোনাফ

গ্রাম- সেরামিশহি, থানা- জগন্নাথপুর, জেলা- সিলেট

আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সুনামগঞ্জ

হাজিরার দিন- ৭ জুলাই, ১৯৭২ বেলা ৩টা

৬২। নং ১০১০ রাজ (৪) ২৭ জুন ১৯৭২

আব্দুল হান্নান

পিতা- ইয়াকুব উল্লাহ

গ্রাম বাদেমশাজাম, থানা- জগন্নাথপুর, জেলা-সিলেট

আদালত: মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সুনামগঞ্জ

হাজিরার দিন - ৭ জুলাই, ১৯৭২ বেলা ৩টা

৬৩। নং ১০৩৬ রাজ (৪) ৩০ জুন, ১৯৭১

সিরাজুল ইসলাম ওরফে খেতু সিরাজ

পিতা- চাতান বিশ্বাস

গ্রাম - মুরাগাছা, থানা - খোকশা, জেলা- কুষ্টিয়া,

আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া।

হাজিরার দিন - ১০ জুলাই ১৯৭২, বেলা ৩টা

৬৪। নং ১০৩৭ রাজ (৪) ৩০ জুন ১৯৭২

মোকসেদ আলী

পিতা- মৃত মোমতাজ আলী

গ্রাম- মুরাগাছা, থানা - খোকশা, জেলা -কুষ্টিয়া

আদালত- মহুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২ বেলা ৩টা

৬৫। নং ১০৩৮ রাজ (৪) ৩০ জুন ১৯৭২

বারুন

পিতা: আক্তার মুন্সী

গ্রাম- মুরাগাছা, থানা -খোকশা, জেলা- কুষ্টিয়া,

আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট সদর, কুষ্টিয়া।

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা

৬৬। নং ১০৩৯ - রাজ (৪) ৩০ জুন ১৯৭২

করিম শেখ

পিতা- শুকর মোহাম্মদ

গ্রাম- খোকশা, থানা- খোকশা, জেলা- কুষ্টিয়া

আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০জুলাই, ১৯৭১, বেলা - ৩টা

৬৭। নং ১০৪০ রাজ (৪) ৩০ জুন ১৯৭২

মোকবুল হোসেন ওরফে মঞ্জু

পিতা- মফিজুদ্দিন বিশ্বাস

গ্রাম- কমলাপুর, থানা- খোকশা, জেলা-কুষ্টিয়া

আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া।

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২ বেলা - ৩টা

৬৮। নং ১০৪১, রাজ-(৪) ৩০ জুন ১৯৭২

আবেদিন

পিতা- বদই শেখ

গ্রাম- হেলালপুর, থানা- খোকশা, জেলা- কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন -১০ জুলাই ১৯৭২, বেলা- ৩টা

৬৯। নং- ১০৪২ রাজ (৪) ৩০ জুন ১৯৭২

মোহন মিয়া

পিতা: মৃত খেরু মিয়া

গ্রাম- শ্রীকোলা কালমা, থানা- কুমারখালী, জেলা - কুষ্টিয়া

আদাল- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা - ৩টা

৭০। নং- ১০৪৩ রাজ(৪) ৩০ জুন ১৯৭২

সাইদ হোসেন

পিতা: মৃত ফেদা হোসেন

ঠিকানা- রাজীব আলী খান, চৌধুরী রোড, মিলপাড়া, কুষ্টিয়া শহর।

থানা এবং জেলা কুষ্টিয়া।

আদালত - মহুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সদর, কুষ্টিয়া

হাজিরার দিন- ১০ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা।

Mar 2, 2008

তালিকা : ৫১ - ৬০

৫১। নং ১৫৭ রাজ (৪) ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২

আহমদ আলী সরকার

পিতা শরীয়তুল্লাহ

গ্রাম তৈপুরঘরা, থানা ভূরুঙ্গামারী, জেলা রংপুর

আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, কুড়িগ্রাম, রংপুর

হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা।


৫২। নং ১৫৮

আবুল বাশার

পিতা ইব্রাহীম কবিরাজ

গ্রাম উলিপুর, থানা উলিপুর, জেলা রংপুর

আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট কুড়িগ্রাম, রংপুর

হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা।


৫৩। নং ১৫৯

উসমাইল হক

পিতা গুলিস্তান আলী

গ্রাম নতুনবস্তি, থানা পচাগড়, জেলা দিনাজপুর

আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট ঠাকুরগাঁও

হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা।

৫৪। নং ১৭৬ রাজ (৪) ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২

পিতা: শফিকুর রহমান ওরফে শফিউর রহমান

পিতা মৌলবী জুলফিকার আলী

গ্রাম চৌগাকোটা, থানা ঠাকুরগাঁও, জেলা দিনাজপুর

আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর

হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা


৫৫। নং ১৭৭

মাহবুবুল আলম

পিতা মোঃ আজিমুদ্দিন

গ্রাম বিরল থানা বিরল, জেলা দিনাজপুর সদর

হাজিরার দিন ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা


৫৬। নং ১৭৮

মোঃ ইসহাক আলী খান

পিতা ইয়াকুব আলী খান

গ্রাম পাঠানপাড়া, থানা কোতওয়ালী, জেলা দিনাজপুর

আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, দিনাজপুর সদর

হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা


৫৭। নং ১৭৯

আব্দুল ওয়াদুদ

পিতা মৃত আব্দুল হামিদ

গ্রাম পার্বতীপুর শহর, থানা পার্বতীপুর, জেলা দিনাজপুর এবং

মুনশীপাড়া শহর, দিনাজপুর

আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, দিনাজপুর সদর

হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা


৫৮। নং ১৮০

নুরুল হুদা চৌধুরী

পিতা মৃত শরীফুদ্দীন চৌধুরী

গ্রাম রাজারামপুর, থানা পার্বতীপুর, জেলা দিনাজপুর এবং

মুনশীপাড়া শহর, দিনাজপুর

আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, দিনাজপুর সদর

হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা


৫৯। নং, ১৮১ রাজ (৪) ফেব্রুয়ারী ১৯৭২

আব্দুল আলীম

পিতা_ আব্দুল ওয়াহেদ

জয়পুরহাট শহর, থানা-জয়পুরহাট, জেলা- বগুড়া

আদালত - মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, জয়পুরহাট, বগুড়া

হাজিরার দিন - ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২, বেলা ৩টা


৬০। নং ১০০৮ রাজ (৪) ২৭ জুন ১৯৭২

আব্দুল সালেক

পিতা- আব্দুল মোনাফ

গ্রাম - সেরামিশহি, থানা- জগন্নাথপুর, জেরা- সিলেট

আদালত -মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সুনামগঞ্জ, জেলা- সিলেট

হাজিরার দিন - ৭ জুলাই, ১৯৭২, বেলা ৩টা

তালিকা : ৪১ - ৫০

৪১। নং ১৪৭
সায়েদুল হক
পিতা মৃত আহমেদ আলী
গ্রাম তেতুলিয়া, থানা সুধারাজ, জেলা নোয়াখালী
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট নোয়াখালী সদর
হাজিরার দিন ২৯
৪২। নং ১৪৮
মোহাম্মদ শফিকুল্লাহ
পিতা হাজি রওশন আলী
গ্রাম বাঁচনগর, থানা লক্ষীপুর, জেলা নোয়াখালী
আদালত মহকুমা ম্যাজি নোয়াখালী সদর
হাজিরার দিন ২৯
৪৩। নং ১৪৯
আবু সুফিয়ান
পিতা লুতফর রহমান মাস্টার
গ্রাম নোয়াখালী, থানা রামগঞ্জ, জেলা নোয়াখালী
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, নোয়াখালী সদর
হাজিরার দিন ২৯
৪৪। নং ১৫০
মোঃ নুরল্লাহ ওরফে নুরুল্লাহ চৌধুরী
পিতা জালালুদ্দিন আহমদ
গ্রাম বড়টাকিয়া, থানা সীতাকুন্ড, জেলা চট্টগ্রাম এবং
৮৩, স্টেশন রোযড, বানিয়াটিল্লা, থানা কোতওয়ালী, জেলা চট্টগ্রাম
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম সদর (উত্তর)
হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী
৪৫। নং ১৫১
খুররম কামুরাদ
পিতা মনজুর আলী মুরাদ
গ্রাম হাওয়া মহল, ভূপাল, ভারত এবং
৫১, সেগুনবাগিচা, থানা রমনা, জেলা য়ঢাকা এবং
করাচী, পাকিস্তান
আদালত মহকুমা ম্যাদিজস্ট্রেট ঢয়াকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন ২৯
৪৬। নং ১৫২
অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার
পিতা নুরুল হাদী
গ্রাম হাবিবপুর, থানা লক্ষীপুর, জেলা নোয়াখলী এবং
৯১/৯২, সিদ্দীক বাজার, থানিা কোতওয়ালী, জেলা য়ঢাকা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, নোয়াখালী অথবা য়ঢাকা (সদর)
হাজিরার দিন ২৯
৪৭। নং ১৫৩
মওলানা নুরুল ইসলাম
পিতা হামিজুদ্দীন
গ্রাম গোবীনাথপুর, থানা ভেড়ামারা, জেলা কুষ্টিয়া
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট কুষ্টিয়া
হাজিরার দিন ২৯
৪৮। নং ১৫৪
মওলানা আশরাফ আলী
গ্রাম ধরমন্ডল, থানা নাসিরনগর, জেলা কুমিল্লা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা
হাজিরার দিন ২৯
৪৯। নং ১৫৫
শাহ মোহাম্মদ রুহুল ইসলাম
পিতা আফজালুল হক
গ্রাম পাচুরিয়া শরীফ, থানা গঙ্গাছড়া, জেলা রংপুর
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট রংপুর সদর
হাজিরার দেন ২৯
৫০। নং ১৫৬
শামসুল হক খন্দোকার
পিতা কোব্বাদ আলী
গ্রাম উত্তরগঞ্জ, থানা নাগেশ্বরী, জেলা রংপুর
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, কুড়িগ্রাম রংপুর
হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা

তালিকা : ৩১ - ৪০

৩১। নং ১৩৭ রাজ (৪)
জসিমুদ্দিন আহমদ
পিতা হাজী তাজুদ্দিন আহমেদ
গ্রাম সেরইল, থানা বেয়ালিয়া, জেলা রাজশাহী
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট রাজশাহী সদর
হাজিরার তারিখ ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
৩২। নং
মমতাজ উদ্দিন আহমেদ
পিতা জিয়ারুদ্দীন আহমেদ
গ্রাম রামবাড়ী, থানা শিবগঞ্জ, জেলা রাজশাহী
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, নওয়াবগঞ্জ অথবা রাজশাহী সদর
হাজিরার দিন ২৯
৩৩। নং
আফাজুদ্দিন
পিতা মুন্সী কসিমুদ্দিন
গ্রাম গোমস্তাপুর, থানা গোমস্তাপুর, জেলা রাজশাহী
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, নওয়াবগঞ্জ অথবা রাজশাহী সদর
হাজিরার দিন ২৯
৩৪। নং ১৪০
আবদুস সাত্তার খান চৌধুরী
পিতা আবুল কাসেম খান চৌধুরী
নাটোর শহর, থানা নাটোর, জেলা রাজশাহী
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, নাটোর, রাজশাহী
হাজিরার দিন ২৯
৩৫। নং ১৪১
আফিল উদ্দিন
পিতা এমারত আলী শেখ
গ্রাম আফিল হাউস, থানাপাড়া, থানা কুষ্টিয়া, জেলা কুষ্টিয়া
হাজিরার দিন ২৯
৩৬। নং ১৪২
আজমত আলী
পিতা ইজ্জত আলী
থানা কোর্টপাড়া, উত্তর ব্লক,
কুষ্টিয়া শহর, জেলা কুষ্টিয়া
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট কুষ্টিয়া সদর
হাজিরার দিন ২৯
৩৭। নং ১৪৩
এম, এ, রশিদ
পিতা মৃত আব্দুর রশিদ
গ্রাম মনোহরপুর, থানা শৈলকুপা, জেলা যশোর
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ঝিনাইদহ,
হাজিরার দিন ২৯
৩৮। নং ১৪৪
ফজলুল হক (এডযভোকেট)
পিতা মোঃ চিরাগ আলী
গ্রাম বাটাসর, থানা হবিগঞ্জ, জেলা সিলেট এবং
১২, ফরাশগঞ্জ সড়ক, থানা সুত্রাপুর, জেলা ঢয়াকা
আদালত মহকুমা ম্যাজি হবিগঞ্জ, সিলেট,
অথবা য়ঢাকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন ২৯
৩৯। নং ১৪৫
দলিলুর রহমান
পিতা আব্দুর রহিম মিঞা
গ্রাম রামচন্দ্রপুর, থানা হাজিগঞ্জ, জেলা কুমিল্লা
আদালত মহকুমা ম্যাজি, চাঁদপুর কুমিল্লা
হাজিরার দিন ২৯
৪০। নং ১৪৬
মৌলবী আব্দুল হক
পিতা মৌলবী মোঃ সাইয়্যিদ
গ্রাম গোবীন্দ্র, থানা চাঁদপুর, জেলা কুমিল্লা
হাজিরার দিন ২৯

তালিকা : ২১ - ৩০

২১, পারানা পল্টন, থানা রমনাম জেলা য়ঢাকা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ময়মনসিংহ সদর অথবা য়ঢাকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন ২৯
২১। নং ১২৭
সৈয়দ কামাল হোসেন রিজভী
পিতা সৈয়দ জামাল হোসেন
৪৬/৩, হেমেন্দ্র দাস রোড, থানা সূত্রাপুর, জেলা ঢয়াকা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, যডাকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী
২২। নং ১২৮
রইসুদ্দিন আহমেদ
পিতা হাজী জিয়ারতুল্লাহ
গ্রাম হারাগাছা, থানা কাউনিয়া, জেলা রংপুর
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, রংপুর সদর
হাজিরার দিন ২৯
২৩। নং ১২৯
সায়েদুর রহমান
পিতা ময়জান আলী
গ্রাম গাইবান্ধা, থানা গাইবান্ধা, জেলা রংপুর
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, গাইবান্ধা
হাজিরার দিন ২৯
২৪। নং ১৩০
জবানউদ্দীন আহমদ
পিতা রহিমুদ্দিন আহমদ
পিতা রহিমুদ্দিন
গ্রাম পূর্ব কাঠালী, থানা জলঢয়াকা, জেলা রংপুর
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট নীলফামারী, রংপুর
হাজিরার তারিখ ২৯
২৫। নং ১৩১
মওলানা তমিজুদ্দিন
পিতা হুজ্জত আলী ওরফে হজরত আলী
গ্রাম হলগাড়া, ঠাকুরগাঁও শহর, থানা ঠাকুরগাঁও, জেলা দিনাজপুর
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর
হাজিরার তারিখ ২৯
২৬। নং ১৩২
আব্দুল্লাহ-আল-কাফি
পিতা মৃত মঈদুর রহমান
গ্রাম নোয়াপাড়া, থানা বীরগঞ্জ, জেলা দিনাজপুর
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, দিনাজপুর সদর
হাজিরার তারিখ ২৯
২৭। নং ১৩৩
মঈসুল আজম ওরফে ইসলাম
পিতা আব্দুর রহিম
গ্রাম দমদমা, থানা আদমদীঘি, জেলা বগুড়া
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, বগুড়া সদর
হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
২৮। নং ১৩৪ রাজ (৪)- ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
এম, এ, মতিন
পিতা হেলাল উদ্দিন মিঞা
গ্রাম সোহাগপুর, থানা বেলকুচি, জেলা পাবনা এবং
লতিফা মঞ্জিল, (সাংহাই রেস্তোঁরা) মীর পুর রোডয, থানা লালবাগ, জেলা ঢয়াকা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সিরাজগঞ্জ, পাবনা অথবা
ঢয়াকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
২৯। নং ১৩৫ রাজ (৪) ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
সৈয়দ আজগর জায়েদী
পিতা মুরতজা হোসেন জায়েদী
গ্রাম রূপকথার লেন, থানা কোতওয়ালী, জেলা পাবনা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট পাবনা সদর
হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
৩০। নং ১৩৬ রাজ (৪) ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
মওলানা আব্দুস সোবহান
পিতা নঈমুদ্দিন
গ্রাম হাজী সোহসীন রোযড, পাবনা শহর
থানা কোতওয়ালী, জেলা পাবনা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট , পাবনা সদর
হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা

তালিকা : ১১ - ২০

১১। নং ১১৩
অধ্যাপক গোলাম আজম
পিতা- মওলানা গোলাম কবির
গ্রাম- বীরগাঁও, থানা- নবীনগর, জেলা- কুমিল্লা এবং
১১৯, এলিফেন্ট রোডয, থানা- রমনা, জেলা- ঢয়াকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট ব্রাহ্মণবাড়িয়া অথবা য়ঢাকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার তারিখ- ২২
১২। নং ১১৫
শাহ আজিজুর রহমান
পিতা- শাহ মোঃ সিদ্দীক
গ্রাম- থানাপাড়া, থানা- কোতওয়ালী, জেলা- কুষ্টিয়া এবং
২২, এস্কাটন রোডয, থানা- রমনা, জেলা- য়ঢাকা এবং
৩২, তোপখানা রোযড, থানা- রমনা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, কুষ্টিয়া সদর অথবা য়ঢাকা (দক্ষিণ)
হাজিরার তারিখ- ২২
১৩। নং- ১১৬
এ, কিউ, এম শফিকুল ইসলাম
পিতা- মৃত আব্দুস সোবহান
গ্রাম- বীরগাঁও, থানা- নবীনগর, জেলা- কুমিল্লা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
হাজিরার তারিখ- ২২
১৪। নং ১১৭
আব্দুল জব্বার খন্দর
পিতা- আব্দুল হামিদ চৌধুরী
গ্রাম- গণক, থানা- সোমাগাজী জেলা নোয়াখালী
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ফেনী
হাজিরার দিন ২২
১৫। নং ১২০
এ, কে, এম মোশাররফ হোসেন
পিতা ইমাম হোসেন
গ্রাম রুখী, থানা নান্দাইল, জেলা ময়মনসিংহ
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট ময়মনসিংহ (সদর)
হাজিরার দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
১৬। নং- ১২১
এ, টি, এম, এ, মতিন
পিতা- মৃত মফিজউদ্দিন পাটোয়ারী
গ্রাম- আশ্বিনপুর, থানা মতলব, জেলা কুমিল্লা এবং
২৯, পুরানা পল্টন, থানা রমনা জেলা ঢয়াকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদপুর কুমিল্লা অথবা
য়ঢাকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন ২৯
১৭। নং ১২৩
মওলানা আব্দুর রহিম
পিতা মৃত কবির উদ্দিন
গ্রাম শিয়ালকাটি, থানা কোতওয়ালী, জেলা বরিশাল
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, পিরোজপুর
হাজিরার দিন ২৯
১৮। নং ১২৭
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
পিতা মোঃ জনাব আলী
গ্রাম বেনুয়াবাইদ, থানা মনোহরদী, জেলা য়ঢাকা এবং
আলম খান লেন, থানা নারায়ণগঞ্জ, জেলা নারায়ণগঞ্জ
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, নারায়ণগঞ্জ
হাজিরা দিন ২৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩টা
১৯। নং ১২৫
এ, এন, এম, ইউসুফ
পিতা আব্দুল গণী
গ্রাম দাদপাড়া, থানা কুলাউড়া, জেলা সিলেট এবং
১৫ আউটার সার্কুলার রোযড (শাহজাহানপুর), থানা রমনা, জেলা য়ঢাকা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, মওলবী বাজার, সিলেট অথবা য়ঢাকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন ২৯
২০। নং ১২৬
জুলমাত আলী খান
পিতা শমশের আলী খান
গ্রাম বড়ই কান্দি, থানা ফুলপুর, জেলা ময়মনসিংহ এবং
২১, পারানা পল্টন, থানা রমনাম জেলা য়ঢাকা
আদালত মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ময়মনসিংহ সদর অথবা য়ঢাকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন ২৯

Mar 1, 2008

তালিকা : ০১ - ১০

বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭২ (রাষ্ট্রপতি আদেশ নং-৮) - এর অধীনে অভিযুক্তদের তালিকা

১। নোটিশ নং- ১০৩ – রাজ (৪) – ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
নুরুল আমিন
পিতা- জহিরুদ্দীন
গ্রাম- বাহাদুরপুর, থানা- নান্দাইল,
জেলা- ময়মনসিংহ এবং
আকুয়া মাদ্রাসা কোয়ার্টার, ময়মনসিংহ টাউন এবং
২০, এ, স্কাটন রোড, রমনা, ঢাকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ময়মনসিংহ সদর অথবা
ঢাকা সদর (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
২। নং- ১০৪ রাজ (৪)- ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
হামিদুল হক চৌধুরী
পিতা- আক্কাস আলী চৌধুরী
গ্রাম- রামনগর, থানা- ফেনী, জেলা- নোয়াখালী এবং
নিরালা গার্ডেন, গ্রীন রোড, থানা- তেজগাঁও, জেলা- ঢাকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ফেনী অথবা ঢাকা (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা।
৩। নং- ১০৫ রাজ- (৪)- ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ খান, এ, সবুর
পিতা- মৃত নাজমুল খান
গ্রাম- সৈয়দ মহল্লা, থানা- ফকিরহাট, জেলা- খুলনা এবং
খুলনা জেলা, যশোর রোড, থানা- কোতওয়লী, জেলা- খুলনা এবং
প্লট নং- ২৮১ ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, সড়ক নং- ২৫
থানা- লালবাগ, জেলা- ঢাকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট বাগেরহাট, খুলনা অথবা ঢাকা (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
৪। নং- ১০৬- রাজ- (৪)- ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
মাহমুদ আলী
পিতা- মৃত মুজাহেদ আলী
সুনামগঞ্জ শহর, থানা- সুনামগঞ্জ, জেলা- সিলেট এবং
৫১০, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, সড়ক নং- ১৯
থানা- লালবাগ, জেলা- ঢাকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, সুনামগঞ্জ অথবা ঢাকা (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা।
৫। নং- ১০৭- রাজ- (৪)- ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
ওয়াহিদুজ্জামান ওরফে ঠান্ডা মিয়া
পিতা- আব্দুল কাদের
গ্রাম- গোপাল গঞ্জ শহর, থানা- গোপালগঞ্জ, জেলা- ফরিদপুর এবং
১০/১ টয়েনবী সার্কুলার রোড, থানা- রমনা, জেলা- ঢাকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট গোপালগঞ্জ, অথবা ঢাকা (দক্ষিণ)
হাজিরার দিন- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
৬। নোটিশ নং- ১০৮ – রাজ (৪) – ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
খাজা খয়েরুদ্দীন
পিতা- খাজা আলাউদ্দিন
গ্রাম- ১৭, আহসান মঞ্জিল, থানা- কোতওয়ালী, জেলা- য়ঢাকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা (দক্ষিণ)
হাজিরার তারিখ-২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩টা
৭। নোটিশ নং- ১০৯ – রাজ (৪) – ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
কাজী, এ, কাদির
পিতা- মৃত কাজী আবেদ উদ্দিন আহমদ
গ্রাম- শোয়ালমানী, থানা- কালড়াকা, জেলা- রংপুর এবং
১১, হাটখোলা, থানা- সূত্রাপুর, জেলা- ঢয়াকা এবং
৮, গুলশান, থানা- তেজগাঁও, জেলা- য়ঢাকা
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা সদর (দক্ষিণ)
হজিরার দিন- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
৮। নোটিশ নং- ১১০ – রাজ (৪) – ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
রাজ ত্রিদিব রায়
পিতা- মৃত রাজা ননীনাক্ষ রায়
গ্রাম—রাজবাড়ি, রাংগামাটি, থানা- কোতওয়ালী
জেলা- পার্বত্য চট্টগ্রাম
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট পার্বত্য চট্টগ্রাম সদর, রাংগামাটি কোর্ট
হাজিরার তারিখ- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
৯। নোটিশ নং- ১১১ – রাজ (৪) – ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
এ, কে, এম শামসুল হক
পিতা- হাজী ওয়ালী আহমদ
গ্রাম- গশিম সৈয়দপুর, থানা- সীতাকুন্যডু, জেলা- চট্টগ্রাম
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম সদর
হাজিরার দিন- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা
১০। নোটিশ নং- ১১২ – রাজ (৪) – ৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
মোঃ ওবায়দুল্লাহ মজুমদার
পিতা- মৃত আলী আজম মজুমদার
গ্রাম- দক্ষিণ সতারা, থানা- ছাগলনাইয়া, জেলা- নোয়াখালী
আদালত- মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, ফেনী
হাজিরার দিন- ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ বেলা ৩ টা

মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের বক্তব্য

আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিকোণ হতে গণহত্যা শব্দটি ব্যাপক অর্থ বহন করে। আইনের পরিভাষায় ’জেনোসাইড’ বলতে কেবল মাত্র কোন জনপদে হত্যাযজ্ঞ সংগঠনের অপরাধকেই বোঝায়না, বরং কোন জনগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র পরিচিতি ও প্রকৃতি বলপূর্বক পরিবর্তন করার উদ্দেশ্য নিয়ে ওই জনসমষ্টির জানমাল ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতিসাধনের সাথে সাথে তার নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ও সংস্কৃতি উপর যে কোন সুপরিকল্পিত হামলা গণহত্যার সংজ্ঞার আওতাভুক্ত।

যে কোন জনপদে যে কোন সশস্ত্র সংঘর্ষের অনিবার্য্য পরিণতি হিসেবেই জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এ সব ক্ষেত্রে যুদ্ধের নিয়ম বহির্ভূত ভাবে যারা নরহত্যা, ধর্ষণ, সম্পত্তি ধ্বংস ইত্যাদি মারাত্মক অপরাধ করে, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তাদের বিচার ও শান্তি হয়। কিন্তু এই ধ্বংসযজ্ঞের মূল উদ্দেশ্য যদি হয় সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহ্যগত বৈশিষ্ট্য সমূহ বিনষ্ট করে দেওয়া, এবং সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞ যদি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে সম্পাদন করা হয়, তবেই তা গণহত্যার অপরাধহিসেবে বিবেচিত হয়। এ সব ক্ষেত্রে যারা সরাসরি ধ্বংসযজ্ঞে অংমগ্রহণ করে শুধু তারাই নয়, বরং এই ধ্বংসযজ্ঞে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন প্রদানকারীরাও অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হয়। দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায়, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ইহুদী ধর্ম সম্প্রদায়কি হত্যাকারী জার্মানদের বিচারের সময় কেবলমাত্র ধ্বংসযজ্ঞের সাথে সরাসরি জড়িতদেরই বিচার হয়নি, বরং নাজী গণহত্যাযজ্ঞের প্রতি নৈতিক সমর্থন দানকারীদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।

যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচাররর ক্ষেত্রে বিশেষ নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। যেহেতু ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সময় সংঘঠিত প্রতিটি অপরাধ স্বতন্ত্র হতে বাধ্য সে জন্য প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া স্বভাবিক কারণেই সম্ভব নয়। এসব ক্ষেত্রে শাস্তি প্রদানের জন্য ভুক্তভোগীর সাক্ষ্যের সাথে অভিযুক্তের অপরাধ সংঘঠনকারী সংস্থার সাথে যুক্ত থাকা এবং অপরাধ সংঘঠিত হওয়ার সময় অকুস্থলে বা কাছাকাছি উপস্থিত থাকার বিষয়টি সমান গুরুত্ব লাভ করে। হিটলারের সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী নাজী পার্টির সমস্ত সদস্যকে শুধুমাত্র ওই পার্টির সদস্য হওয়ার কারণেই শাস্তি ভোগ করতে হয়েছিল।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানী বাহিনী এ দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় সমগ্র বাংলাদেশে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, যে কোন বিচারেই তা ছিল একটি নজীরবিহীন গণহত্যা।

যদিও গণহত্যার মত অপরাধ মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই সংঘটিত হয়েছে, তবু গণহত্যার আন্তজাতিক ভাবে প্রয়োগ যোগ্য সংজ্ঞা প্রদান এবং গণহত্যা যেহেতু সমগ্র মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, সেহেতু গণহত্যার অপরাধের বিচার ও শাস্তি প্রদান আন্তর্জাতিক বিবেচনার ব্যাপার- এই বিশ্বজনীন সাধারন নীতির প্রচলন করা হয় মূলতঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জার্মানীর পরাজয়ের পর ১৯৪৫ সালের ৩১ মে রয়্যাল কোর্ট অব জাস্টিস হলে যুদ্ধাপরাধ কমিশনের সদস্য রাষ্ট্রগুলির এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে কমিশনের চেয়ারম্যার লর্ড রাইট বলেন:
"... ... নাজী অথবা ফ্যাসিবাদী অপরাধের বৈশিষ্ট্য হল যে, সমগ্র যুদ্ধ এলাকার ও অধিকৃত এলাকায় তারা যে শুধু ব্যাপক ভাবে অপরাধই করেছে তাই নয়, তারা দেখিয়ে দিয়েছে যে, এর পেছনে ছিল ব্যাপক একটা পরিকল্পনা; এসব এসেছে একজন দুর্ধর্ষ অপরাধী ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের মস্তিষ্ক থেকে এবং এসব পরিকল্পনা কার্যকর হয়েছে, বিস্তৃত হয়েছে, সুসংগঠিত প্রতিনিধি ও কৌশলের মাধ্যমে; এর অর্থ প্রত্যেকে কাজ করেছে একটি নির্দেশে, একটি সূত্রে।"

ওই বছর ৮ আগষ্ট, নেতৃস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচরের জন্য একটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এই ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালী বিধিতে ছিল মোট ৩০ টি অনুচ্ছেদ।

ষষ্ঠ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল যে, ইউরোপীয় অক্ষশক্তির দেশগুলোর প্রয়োজনে যে ব্যক্তিগতভাবে অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসাবে কাজ করেছে এবং নিম্নে লিখিত অপরাধগুলো করেছে তার বিচার ও শাস্তি দেয়ার অধিকার এই ট্রাইব্যুনারের থাকবে :

(ক) শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ- যথা, যুদ্ধ সূচনা বা প্রস্তুতি পরিকল্পনা অর্থাৎ আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন অথবা উল্লিখিত সে কোনটা করার জন্য সাধারণ পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ অথবা ষড়যন্ত্র করা।
(খ) যুদ্ধাপরাধ- যথা, যুদ্ধের আইন অথবা প্রথা ভঙ্গ করা। এতে যুক্ত হবে, কিন্তু এর মধ্যেই সীমিত নয়, অধিকৃত এলাকায় বেসামরিক ব্যক্তিদের হত্যা, দুর্ব্যবহার অথবা ক্রীতদাসের মত শ্রমে বা অন্যকাজে নিয়োগ করা, যুদ্ধবন্দীদের প্রতি দুর্ব্যবহার করা অথবা নাবিকদের প্র্রতি অত্যাচার অথবা সামরিক প্রয়োজনের দ্বরা সমর্থিত নয় এমন সরকারী ও বেসরকারী সম্পত্তি বিনষ্টকরন ও ইচ্ছাকৃতভাবে শহর, নগর ও গ্রামের ধ্বংস সাধন।
(গ) মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ - যথা, যুদ্ধের সময় বা আগে কোন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা, বিলুপ্ত করা, ক্রীতদাস করা বা অন্যান্য অমানবিক কাজ ; অথবা রাজনৈতিক, গোষ্ঠীগত ও ধর্মীয় কারনে বিচার।
উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে নাজী যুদ্ধাপরাধীদের ইতিহাসখ্যাত ন্যুরেমবার্গ বিচার শুরু হয় ১৯৪৫ সালের নভেম্বর মাসে। ১ অক্টোবর ১৯৪৬ পর্যন্ত এই বিচার কাজ চালিয়ে মাত্র ১১ মাস সময়ে মূল যুদ্ধপরাধীদের বিচারের কাজ শেষ করা হয়। অপরাধীদের শাস্তি অবিলম্বে কার্যকর করা হয়।

এই বিচারের পর ট্রাইব্যুনালের নীতিমালা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আলোচিত হয় এবং ভবিষ্যতের রক্ষাকবচ হিসেবে ন্যুরেমবার্গ বিচারকে আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে গ্রহণের বিষয়টি বিবেচিত হয়। তদনুযায়ী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৫৫ তম সভায় ১১ ডিসেম্বর, ১৯৪৬ তারিখের ৯১ (১) সংখ্যক নিম্নলিখিত প্রস্তাবটি সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত হয়ঃ
’হত্যা যেমন ব্যক্তিগত অস্তিত্ত্ব রক্ষার অধিকার লংঘন করে তেমনি গণহত্যাও একটি মানব গোষ্ঠীর বাঁচার অধিকার লংঘন করে। এ ধরনের অধিকার লংঘন মানব চেতনাকে আহত করে, এর ফলে মানব সমাজ ঐ মানব গোষ্ঠীর কৃষ্টি বা ঐজাতীয় অন্যান্য অবদান থেকে বঞ্চিত হয় এবং তা জাতিসংঘের লক্ষ্য ও মূলনীতি এবং নৈতিক আইনের পরিপন্থী।
এ ধরনের বহু গণহত্যার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে যখন গোত্রগত, ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও অন্যান্য গোষ্ঠীকে অংশত বা পূর্নতঃ ধ্বংস করা হয়েছে।
গণহত্যার শাস্তি প্রদান একটি আন্তর্জাতিক বিবেচনার ব্যাপার।
একই সভায় পরিষদ জাতিসংঘের অর্থনৈতিক সামাজিক কাউন্সিলকে একটি খসড়া আইন প্রণয়নের অনুরোধ জানায়। তদনুযায়ী ষষ্ঠ কমিটি খসড়া প্রণয়ন করে এবং ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদে এ’টি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্পাদত একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি হিসেবে গৃহীত হয়।
চুক্তির মূল বক্তব্য :
চুক্তিবদ্ধ দলগুলো ১১ ডিসেম্বর ১৯৪৬, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৯১ (১) প্রস্তাবে ঘোষণা করে - 'গণহত্যা আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ, জাতিসংঘের লক্ষ্য ও মূল নীতির পরিপন্থী এবং সভ্য জগৎ এটাকে নিন্দা করছে ও মনে করছে:
ইতিহাসের সব পর্যায়ে গণহত্যা মানব সমাজে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। তারা আরো মনে করে, মানুষকে এ ধরনের জঘন্য যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। নিম্নে যা লেখা হলো তাতে তারা স্বাক্ষর দান করছে-
ধারা- ১। চুক্তিবদ্ধ দলগুলো সত্য বলে স্বীকার করে যে, গণহত্যা শাস্তি অথবা যুদ্ধ যে কোন সময় সংঘটিত হোক না কেন, আন্তর্জাতিক আইনে তা অপরাধ, যা রোধ ও শাস্তি দানের প্রতিশ্রুতি তারা দিচ্ছে।
ধারা- ২। বর্তমান চুক্তিতে গণহত্যার অর্থ নিম্নলিখিত যে কোন কাজগুলো, অংশত বা পূর্ণতঃ, কোন জাতীয়, গোত্রহত, গোষ্ঠীগত বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘঠিত হওয়া। যেমন:
ক। দলের সদস্যকে হত্যা করা,
খ। দলের সদস্যদের দেহ অধবা মানসিক দিক থেকে গুরুতর ক্ষতি করা,
গ। ইচ্ছাকৃতভাবে অংশতঃ বা পূর্ণতঃ দৈহিক ধ্বংস সাধনের পরিপল্পনায় দলীয় জীবনে আঘাত হানা,
ঘ। দলের জন্মরোধ করার উদ্দেশ্যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ,
ঙ। বল প্রয়োগে এক দলের শিশুকে অন্য দলে সরানো।
ধারা- ৩: নিম্নলিখিত কাজগুলো শাস্তির যোগ্য
ক। গণহত্যা;
খ। গণহত্যা করার ষড়যন্ত্র;
গ। গণহত্যা করার জন্য প্রত্যক্ষ ও গণ উত্তেজনা সৃষ্টি,
ঘ। গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকা।
ধারা- ৪ : যে সব ব্যক্তি গণহত্যা করবে বা ৩ নম্বর ধারায় বর্ণিত কাজগুলোর যে কোনটি করবে, সে শাসনতান্ত্রিক মতে শাসক, সরকারী কর্মচারী বা ব্যক্তি যেই হোক না কেন, তাকে শাস্তি পেতে হবে।
ধারা- ৫ : চুক্তিতে স্বাক্ষর দানকারী দলগুলো এই আশ্বাস দিচ্ছে সে, তাদের স্ব-স্ব শাসনতন্ত্র অনুযায়ী এই চুক্তিকে কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন তৈরী করবে, বিশেষতঃ, যে সব ব্যক্তি গণহত্যার অপরাধে অপরাধী বা তৃতীয় ধারায় বর্ণিত কাজগুলোর যে কোন একটা করার জন্য দোষী বলে বিবেচিত হবে, তাদের শাস্তিদানের ব্যবস্থা করবে।’
গণহত্যার উপরোক্ত বিশ্বজনীন সংজ্ঞার আলোকে বিচার করলে দেখা যায়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে নজীর বিহীন হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে তার সাথে জড়িত প্রত্যেকটি পাকিস্তানী সেনা এবং তাদের এদেশীয় দোসর শাস্তি কমিটির সদস্য, রাজাকার, আলবদর, আলশামস সকলেই গণহত্যার অপরাধে অপরাধী।

বাংলাদেশে পাকিস্তানী বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ কেবলমাত্র স্বধীকারের দাবীতে পরিচালেত একটি ব্যাপক গণ আন্দোলনকে স্তব্ধ করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত আকষ্মিক শক্তি প্রয়োগ নয়, বরং তা ছিল বাঙারী জাতির নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসমূহ বিনষ্ট করার এক সুদুর প্রসারী পরিকল্পনার অংশ বিশেষ। ঠিক যেভাবে হিটলারের নাজী বাহিনী চেয়েছিল ইউরোপকে ইহুদীমুক্ত করতে এবং তাদের ভাষায় ইউরোপের ’নিম্নশ্রেণীর জাতিগুলোকে সেমিটিক রক্তে পরিশোধিত করতে, ’ তেমনি পাকিস্তানী বাহিনীরও উদ্দেশ্য ছিল- এদেশে বাঙালী জাতিসত্ত্বার চিন্তা চেতনাকে সমূলে উৎপাটন করে এই জনগোষ্ঠীকে তাদের অধীনস্থ দাস জাতিতে পরিণত করা।
১৯৭১ এর গণহত্যার সময় পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দালালদের ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনার জন্য প্রণীত পরিকল্পনার প্রকৃতি এবং সে সময় প্রদত্ত তাদের বিভিন্ন বিশিষ্ট বক্তব্য বিশ্লেষণী দৃষ্টি দিয়ে দেখলে এ’বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে যায়। এবিষয়ে বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সূচিন্তিত, মতামত প্রণিধানযোগ্য। এখানে শুধু উদ্ধৃত করা হবে খোদ পাকিস্তানের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিকের বক্তব্য।

’৭১ - এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পাক বাহিনীর শোচনীয় পরাজয়ের পর পরই ১৯৭২ সালের শুরুতে পাকিস্তানী বাহিনীর পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধানে সেদেশে সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিদের সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠন করা হয়। ’ডিবেক্যাল কমিশন’ বা ’বিপর্যয় কমিশন’ নামে পরিচিত ওই কমিশনে সাক্ষ্য দানকারীদের অন্যতম ছিলেন পাকিস্তান তাহরিক-ই-ইশতিকলাল পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মালিক গোলাম জিলানী। তাঁর লিখিত স্বাক্ষ্যে তিনি বলেন, ’... ... বাস্তবিক পক্ষে, আমার প্রাপ্ত তথ্য ও বিশ্বাস অনুসারে (আমি বলতে পারি), যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক অ্যাকশন গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় – এবং এই সিদ্ধান্ত সাধারণভাবে সবাই যে রকম জানে বা বিশ্বাস করে থাকে, তার চেয়ে অনেক আগেই নেওয়া হয়েছিল- সেই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা ছিল, যেভাবে কুখ্যাত আইখম্যান পরিকল্পনায় হিটলার ইহুদী জাতিকে নির্মূল করে ইহুদী সমস্যার চ’ড়ান্ত সমাধান করতে চেয়েছিল, সেই একই কায়দায় তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের সমগ্র জনসমষ্টিকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা। এটি ছিল বিকৃত মস্তিষ্কজাত, চরম পৈশাচিক এক ষড়যন্ত্র, যা পাকিস্তানের জন্য লজ্জা ও কলঙ্কের কারণ হতো, এবং এটা তা’ই বয়ে নিয়ে এসেছে।’(দৈনিক মর্নিং নিউজ ২৮ নভেম্বর ’৭৩ )
বাংলাদেশে পাকিস্তানী বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ যে নাজী জার্মানীর ইহুদী হত্যালীলার চেয়েও ভয়াবহ ছিল সে বিষয়ে মালিক জিলানী তাঁর সাক্ষ্যের অপর একটি অংশে বলেন, ...... বস্তুতঃ আমি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ’হামলা’ করার জন্য ভারতের সমালোচনা তো করবই- না, বরং পাকিস্তানের নামকে এর রাজস্বসহ একচেটিয়া দখল করে নেওয়া মাতাল গুন্ডাদের একটি দলকে পদানত করার কাজে সাফল্যের জন্য আমি মিসেস ইন্তিরা গান্ধীকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আমি ভারতের প্রধান মন্ত্রী হতাম, তাহলে আমি অনেক আগেই পদক্ষেপ নিতাম যাতে করে যে তিরিশ লক্ষ বাঙালীকে হিটলারের ইহুদী নিধনযজ্ঞের সময় থেকে সর্বঅধিক নৃশংসভাবে, ঘৃণাতম অপরাধীর মত, সর্বাধিক স্যাডিস্টিকভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাদের অন্ততঃ কয়েকজনকে বাঁচানো যেত। সরকার এবং এ সমস্ত নৃশংস ঘটনাবলীর জন্য যারা দায়ী সেই সামরিক বাহিনীরই বহু উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার কাছে ধর্ষণ বেং সম্ভ্রম লুন্ঠনের যে সমস্ত কাহিনী আমি শুনেছি, এবং এ’গুলিকে আমি আন্তরিকভাবে সত্য বলেই বিশ্বাস করি - সেগুলি এমনই নিষ্ঠুর যে নাজীরাও তাদের অধিকৃত এলাকার ধ্বংসযজ্ঞে কখনও তেমন নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেনি।’২। (দৈনিক মর্নিং নিউজ ২৮ নভেম্বর ’৭৩ )

সদ্য যুদ্ধে পরাস্ত, দেশের একটি অংশ হারিয়ে বিপর্যস্ত কোন জাতি, যা কিনা পরাজিত সেনা বাহিনীর দ্বারাই শাসিত হচ্ছে, তাদের সামনে ওই দেশেরই একজন শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিকের এই বক্তব্যই সন্দেহাতীতভাবে প্রমান করে যে, বাংলাদেশে পাকিস্তানী বাহিনীর গণহত্যা ছিল বাঙালী জাতিসত্ত্বাকে সমূলে উৎপাটন করার লক্ষ্যে সুপরিকল্পিত এক ভয়াবহ ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ।

যদিও মানবতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত গণহত্যার অপরাধসমূহের আপেক্ষিক গুরুদ্ব নির্ণয় করা প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার, তবু বাস্তব ঘটনার নিরিখে একথা বললে অত্যুক্তি হবেনা যে, বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ছিল সাম্প্রতিককালে বিশ্বের অন্যান্য স্থানে সংঘটিত
গলহত্যা সমূহ যেমন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা, ভিয়েতনামে সংঘটিত গণহত্যা ইত্যাদির চেয়েও আরও বেশী হৃদয় বিদারক এবং ধ্বংসাত্মক। পূর্ববর্তী গণহত্যাযজ্ঞর ঘটনা সমূহে একটি দেশের সমগ্র শিক্ষিত শ্রেণীকে পরিকল্পিতভাবে নির্মূল করে দেওয়ার চক্রান্ত সংঘটিত হয়েছিল বলে জানা যায় না, যা হয়েছিলা আমাদের দেশে। বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী হত্যার পর অভিযানে ’জেনোসাইড’ শব্দটির সাথে যুক্ত হয়েছিল নতুন একটি শব্দ, ’এলিটোসাইড’। মৃত মানুষের শরীর থেকে মাংস-অস্থি খুলে নিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে হাড়ের স্তুপ সাজানোর মত বর্ণনাতীত নৃশংসতা অন্য কোন দেশে প্রদর্শিত হয়েছে এমন দৃষ্টান্ত নেই। আলবদর বাহিনী গেস্টাপো বাহিনীর চেয়ে অনেক বেশী নৃশংসতা প্রদর্শন করেছে। শান্তি কমিটির সদস্যরা নিঃসন্দে হে নাজি পার্টির সদস্যদের কৃত অপরাধের তুল্য অপরাধই করেছে।

গণহত্যার অপরাধের বিচারের বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিবেচনার বিষয় হওয়া সত্বেও এবং এই বিচারের সপক্ষে জাতিসংঘ, বিশ্ব শান্তি পরিষদ, এ্যামনেস্চি ইন্টারন্যাশনাল, আন্তর্জাতিক রেডক্রস ইত্যঅদি মানবাধিকার সংগঠন সমূহসহ সারা বিশ্বের জনমত সোচ্চার হলেও এদেশে যুদ্ধাপরাধী পাক সেনাদের বিচার হয়নি এবং তাদের সহায়তাকারী দালালদের বিচারের যে ব্যবস্থা করা হয়েছিল, অপরাধের প্রকৃতি ও গুরুত্বের বিচারে তা ছিল দুঃখজনক ভাবে অপ্রতুল।

গণহত্যার মতো অপরধের ক্ষমা হয় না কিংবা দেষীদের বিচারের সময়য়ও পেরিয়ে যায় না। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের আজও বিচার করে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের বাস্তব অবস্থার নিরিখে পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী এবং এদেশীয় দালালদের যথাযথ বিচার করা বর্তমানে কিংবা ভবিষ্যতে হয়ত অত্যন্ত জটিল ও দুরুহ কাজ হবে কিন্তু জাতীয় ইতিহাসে পাকবাহিনীর দালালদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করে রাখার কাজটি মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিক ইতিহাস রচনারই অবিচ্ছেদ্য অংশ। এছাড়া দালালদের চিহ্নিত করে এদের রাজনৈতিক পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া স্তব্ধ করাও আমাদের দায়িত্ব।

মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের বিরোধিতা করেছে এবং পক্ষান্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের তালিকা প্রস্তুত করার দাবী জানিয়ে এসেছে। আমাদের বিশ্বাস এবং দায়িত্ববোধই একাত্তরের অপ্রকাশিত ইতিহাস সংকলন করে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন খন্ডে প্রকাশ করার প্রেরণা যুগিয়েছে। আমরা সকলের সহযোগিতা চাই।

সম্পাদকের কথা

ইতিহাসের করুণতম গণহত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট স্বাধীন বাংলাদেশ প্রকৃত প্রস্তাবে একটি বিশাল সমাধি ক্ষেত্র। এই শ্যামল মাটির প্রতিটি কণা স্বাথীনতার জন্য আত্মদানকারী শহীদের পবিত্র রক্তে পতে-পরিশুদ্ধ। আমরা জীবিত যারা এই পবিত্র ভূমিতে বিচরণ করি তারা প্রতিদিন এই মৃত্তিকার গভীরে প্রোথিত কোন না কোন পবিত্র শহীদের লাশের উপর দিয়ে হাঁটি। যদি মূহুর্তের জন্য আমরা থমকে দাঁড়িয়ে একবা ভেবে দেখি, তা হলে—এই মাটির যেখানেই আমরা দাঁড়াই না কেন, আমাদের দুষ্টিসীমার মধ্যে থাকবে ’৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর লব্ধ মহাবিজয়ের পর আবিষ্কুত কয়েক সহস্র গণসমাধির কোন না কোনটি। যদি আমরা প্রতিটি শহীদের জন্য স্মৃতির মিনার বানাই, তাহলে এই দেশ হয়ে যাবে মিনারের দেশ। এই শোণিত-শুদ্ধ মাটির উপর দিয়ে আমাদের সর্বদা শ্রদ্ধাবনত চিত্তে হাঁটা উচিত, কারণ যাঁরা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য তাঁদের বর্তমানকে উৎসর্হ করে গিয়েছেন, তাঁরা আছেন এ’ভূমির সর্বত্র।

এই সমাধি নির্মাণ করেছিল পাকিস্থানী বাহিনীর এক লক্ষ সশস্ত্র জন্তু আর তাদের এদেশীয় দোসর ৭ লক্ষ বিশ্বাসঘাতক দালাল। ’৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর এই সমাধি ক্ষেত্রে জীবনের অঙ্কুরোদগম হয়েছিল।

কিন্তু সেদিন থেকেই অযোগ্য, অকৃতজ্ঞ আমরা নিজেরাই আরেকটি সমাধি গড়ার কাজ শুরু করেছি-মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আর চেতনাকে বিকৃতি আর বিস্মৃতির গর্ভে সমাধিস্থ করার কাজ। স্বাধিনতার পর থেকেই ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার দায়ে দায়ী যুদ্ধাপরাধী পাকসেনা এবং দেশীয় দালালদের মানবতা ও ন্যায় বিচারের সমস্ত দাবীকে উপেক্ষা করে বিনা তদন্তে বিনা বিচারে ছেড়ে দেবার কাজ শুরু হয়। তারপর পুনর্বাসনের নানা পর্যায় পেরিয়ে সেদিনের সেই ফেরারী খুনী দালালরাই আজ আমাদের সরকার সমাজ, রাজনীতি আর অর্থনীতির সর্বক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আসনে প্রবল প্রতাপে আসীন হয়ে স্বজনহারা দেশবাসীকে দুঃশাসনের শত শৃংখলে আবদ্ধ করেছেন। যে নরমেধযজ্ঞে তিরিশ লক্ষ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের অকল্পনীয় নৃশংসতায় নির্মৃল করা হয়েছে, সেই হত্যাযজ্ঞের সাথে জড়িত একজন সামরিক অফিসারের বিচারও আমরা করিনি। স্বদেশে আমরা গগনচুম্বী সৌম্য সৌধ গড়েছি ’৭১ এর অনিঃশেষিত প্রাণ মহীদানের স্মরণে। প্রতিদিন টেলিভিশনের পর্দায় স্মরণ সঙ্গীতের মূর্চ্ছনার সাথে সাথে প্রদর্শিত হয় সেই সৌধ। কিন্তু তারপরেই হয়ত উপায়হীন আক্রোশের সাথে আমাদের দেখতে হয়, নাম না জানা শহীদের গণকবরের উপর নির্মিত সৌধের পাদদেশে সহাস্যে দাঁড়িয়ে একাত্তরের প্রমাণিত খুনী দালাল মন্ত্রীর মর্যাদায় বিদেশী অভ্যাগতদের স্বাগত জানাচ্ছে। বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী দালালরা আজ আমাদের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেয়। হত্যা পরিকল্পনার মূল কেন্দ্র পাকিস্তানে গিয়ে ঘোষণা করে আসে, বাঙালী জাতি ’৭১-এ স্বাধীনতা পেয়ে আজ অনুতপ্ত। বাঙালীর অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উঠে আসা যে জয়বাংলা শ্লোগানে একদিন প্রকম্পিত হয়েছিল বাংলাদেশের আকাশ বাতাস, তাকে আজ স্থানচ্যুত করেছে বিজাতীয় ভাষার নিরাশ্রয় শব্দের কঙ্কাল।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে আজ সর্বাত্মকভাবে বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। আমাদের শিশুরা জানেনা আমাদের জাতির পিতা কে। তারা জানে একাত্তরে আমরা 'হানাদার’ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এই ’হানাদার’ কারা, তা তারা জানেনা, কেউ কেউ জানে ’হানাদার বাহিনী’ হল ভারতীয় বাহিনী। রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস কারা ছিল তা তারা জানে না।

সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা বাঙালী জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র আর ধর্ম নিরপেক্ষতাকে নির্বাসিত করা হয়েছে। একচক্ষু সাম্প্রদায়িকতার যে মধ্যযুগীয় বর্বরতা আমাদের পিতা এবং ভ্রাতার নির্মম হত্যাকান্ডের আর মাতা এবং ভগ্নীর লাঞ্ছনার কারণ হয়েছে, তা আজ দিনে দিনে আমাদের মস্তিস্কের গভীরে আমূল প্রোথিত করা হচ্ছে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জীবনের ন্যুনতম চাহিদা পূরণের জন্মগত অধিকারকে উপেক্ষা করে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ছত্রছায়ায় চালু করা হয়েছে অদ্ভুত লুটেরা অর্থব্যবস্থা।

এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায়না। আমরা এই অবস্থা চলতে দেব না, চলতে দিতে পারিনা। অনেকে বলে থাকেন, একটি শিশু জন্মাতেও সময় নেয় দশ মাস ; মাত্র নয় মাসের যুদ্ধে যেভাবে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে তাতে অকালে জন্মনো শিশুর মতই বাংলাদেশও হয়েছে জন্মলগ্ন থেকেই ব্যধিগ্রস্থ, সম্ভবনাহীন। কিন্তু তাঁরা ভুলে যান, ওই নয় মাসেই যে রক্তমূল্য আমরা দিয়েছি, তা আর কোন জাতি কখনও দেয়নি। আমাদের স্বাচ্ছন্দ বর্তমানের জন্য, আমাদের অনাগত বংশজদের সমৃদ্ধি ভবিষ্যতের জন্য প্রদেয় মূল্যের অতিরিক্ত আমরা ইতিমধ্যেই পরিশোধ করেছি। এখন আমাদের সুফল ভোগ করার সময়।

সে উদ্দেশ্যে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ হবে, একাত্তরের সেই ঘোর দুর্দিনে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল আপন দেশবাসীর সাথে, যারা আজও ষড়যন্ত্রের সহস্র জাল বিস্তার করে রেখেছে এদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অর্থনীতি আর সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, তাদের চিহ্নিত করে সমাজের কর্তৃত্ব তাদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেয়া। এ’কোন অলৌকিক কথা নয়। গণহত্যার শিকার বিশ্বের অন্যান্য জাতি স্বাধীনতাপ্রাপ্তির বহু বছর পরও খুনী দালালদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের ব্যবস্থা করেছে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় মিত্রপক্ষের বিভিন্ন দেশে যারা দালালী করেছে, তাদের অনুসন্ধান ও যথোচিত শাস্তি প্রদানের প্রক্রিয়া আজও সক্রিয় রয়েছে। মাত্র গত মাসেই জাতিসংঘ ৫ হাজার সন্দেহভাজন নাৎসী পার্টি সদস্যের তালিকা প্রকাশ করেছে, তদন্তের পর এদের বিচার করে শাস্তি দেওয়া হবে। এসব দেশে গণহত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলনা, অথচ গণহত্যাকে সক্রিয় সমর্থন জানিয়েছে এ ধরণের সাধারণ দালালদেরও ন্যূনতম রাজনৈতিক অধিকার ভোটাধিকার রহিত করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি সমূহের দূরদৃষ্টির অভাব এবং অনৈক্যের কারণে আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলুন্ঠিত। কিন্তু আমাদের দৃঢ় আস্থা আছে, একাত্তরে আমরা যে অতুল্য আত্মত্যাগ আর বীর্য্যের পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছি, তাকে জাতীয় কর্মকান্ডেযর অনুপ্রেরণার মূল উৎস হিসেবে স্থাপন করার মত শুভবুদ্ধি, সাহস আর সক্রিয়তা একদিন পুনরুজ্জীবিত হবেই। বিশ্বের সভায় আজ আমাদের দাঁড়াতে হচ্ছে দীন, ঐতিহ্যহীন, ক্ষমতাহীন, নতশির হয়ে। কিন্তু একদিন আমরা অনুধাবন করবই যে বীর্য্যে আত্মত্যাগে আর ঐতিহ্যে আমরা কোন জাতির চেয়ে কখনই কম নই বরং অগ্রসর। এই আত্মবিস্মৃতির অন্ধরাত্রি একদিন কাটবেই। গৌরবময় বায়ান্ন, ঊনসত্তর, একাত্তরের মত আবার আমরা জেগে উঠবই। ইতিহাস সাক্ষী দেয়, অগণন মানুষের আত্মদান কখনও বুথা যায় না। আজ হোক কাল হোক, এদেশের মাটিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একদিন প্রতিষ্ঠিত হবেই।

এই সুগভীর আস্থা থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী দালালদের চিহ্নিত করার কাজে আমার সীমিত সামর্থ্যকে নিয়োগ করেছি। একাত্তরের মূলস্বাধীনতা বিরোধী সংগঠনগুলি গড়ে ওঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, মূখ্য দালালদের তৎকালীন কার্যক্রম, তাদের পুর্বাসনের সাধারণ পটভূমি, এবং তাদের বর্তমান অবস্থানের বর্ণনা দেয়ে লেখিত দলিলের ভিত্তেতে আমি গতবছর ’একত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ গ্রন্থটি রচনা করি মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্রের পৃষ্ঠপোষকতায়। তথ্যের অপ্রতুলতা সত্বেও গ্রন্থটি বিপুলভাবে সমাদৃত হওয়ায় এ’কথাই প্রমাণিত হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিস্মৃত হয়নি, বরং বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর অনীহা কিংবা অবহেলার কারণেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জাতীয় জীবনে তার দিক নির্ণায়ক ভূমিকাটুকু পালন করতে পারছেনা। ঘাতক ও দালালদের কর্মকান্ডের ইতিহাস উন্মোচনে গ্রন্থটির সম্ভাব্য ভূমিকা বিবেচনা করে গ্রন্থটি প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণকারী সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্র এ’টিকে তাঁদের পূর্ব পরিকল্পিত তিন খন্ডের ইতিহাস প্রকল্পের প্রথম খন্ড হিসেবে গ্রহণ করেছেন। বইটিকে কয়েক খন্ডে বৃহদাকার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস গ্রন্থে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার তাঁরা ব্যক্ত করেছেন। ইতিমধ্যে অভিজ্ঞ ইতিহাসবিদের তত্বাবধানে গ্রন্থটিকে পরিমার্জিত করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি চেতনা বিকাশ কেন্দ্রের সুযোগ্য ও নিবেদিত প্রাণ নির্বাহীদের তত্বাবধানে আমার ওই ক্ষুদ্র প্রয়াসটি দালালদের কর্মকান্ডের ইতিহাস উন্মোচনে ক্রমাগত অধিকতর ভূমিকা রাখবে।

দালাল আইনে অভিযুক্তদের তালিকা সংকলন করে বর্তমান গ্রন্থটি গ্রন্থণার অনুপ্রেরণাও আমি একই বিশ্বাস থেকে লাভ করেছি। সরকারী উদ্যোগে তথাকথিত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হবার পর থেকেই বিভিন্ন সংস্থা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নয় বরং দালালদের তালিকা প্রণয়নের দাবী উঠে। মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ এ বিষয়ে প্রথমেই তাদের জোরালো বক্তব্য রেখেছিল। একই ভাবে সচেতন অন্যান্য সংগঠনও ক্রমশঃ এ বিষয়ে দাবী তোলে। দেশবাসী এই দাবীর যৌক্তিকতা অনুধাবন করলে দালাল তালিকা প্রণয়ন বন্ধারে দালালদের তালিকা প্রণয়ন করার দাবী জানায়। কয়েক দফা সংসদে বিরোধী দলীয় কতিপয় সদস্য গ্রন্থটির কয়েকটি স্থান উদ্ধৃত করে বক্তব্য রাখলে বিতর্কেরসৃষ্টি হয়। চুড়ান্ত পর্যায়ে ’৮০ র ৩ ’মার্চ’ জাতীয় সংসদে এবিষয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়। সংসদে বিরোধী দলীয় আওয়ামী লীগ সদস্য মোশাররফ হোসেন এ’ব্যাপারে জরুরী জনগুরুত্ব সম্পন্ন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব উত্থাপন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর জবাবের পর এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা দালালদের তালিকা প্রণয়ন করার জোর দাবী জানিয়ে বক্তব্য প্রদানের এক পর্যায়ে বলেন, ’আজ যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে তেমনিভাবে কারা টিক্কা, রাও ফরমান আলীর সহযোগী ছিল, কারা রাজাকার আলবদর ছিল, ’৭২ সলের সংবাদপত্র দেখলে কারা স্বাধীনতার পর দালাল আইনে জেলে ছিল, কারা ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল, এসব কিছু, ’৭২ সালের কাগজে পাওয়া যাবে এদের তালিকা প্রস্তুত করে কেন সরকার প্রকাশের উদ্যোগ নেন না। ( দৈনিক বাংলার বাণী-৩ মার্চ ’৮৭)

সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রীর এই বক্তব্যে আমি অনুধাবন করতে পারি যে, ১৯৭২ সালের দালাল আইনের অধীনে বিচারযোগ্য অপরাধের অভিযোগে যাদের কারারুদ্ধ এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করা একান্ত প্রয়োজন। ইতিপূর্বে ’একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ রচনার উদ্দেশ্যে তথ্যানুসন্ধানের এক পর্যায়ে আমি ১৯৭২-৭৩ সালের বাংলাদেশ গেজেট (এক্সট্রা অর্ডিনারী) র বিভিন্ন সংস্করণে প্রকাশিত দালাল আইনে অভিযুক্ত আসামীদের একটি ধারাবাহিক তালিকা আবিষ্কার করি। বিরোধী দলীয় নেত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী এই তালিকা দালাল তালিকা হিসেবে প্রকাশিত হতে পারে এ বিষয়টি অনুধাবন করে আমি এটি প্রকাশের জন্য কয়েকটি সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করি। এ’দের প্রত্যেকে এ বিষয়ে প্রশংসনীয় আগ্রহ প্রদর্শন করেছেন। একটি ক্ষেত্রে আমি একজন অগ্রজ কবির আগ্রহের মর্যাদা দিতে না পারার বিশেষ লজ্জিত, কিন্তু এ’দের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদকেই তালিকাটি প্রকাশের জন্য সবচেয়ে উপযোগী সংগঠন বিবেচনা করে আমি তাদের মাধ্যমেই তালিকাটি প্রাকাশের সিদ্ধান্ত নিই। এখন থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের উদ্যোগ ও প্রকাশনায় এবং আমার সম্পাদনায় দালাল আইনের অধীনে কারারুদ্ধ ৩৭ হাজার অভিযুক্তের প্রত্যেকের নাম ঠিকানা কয়েকটি খন্ডে মুদ্রিত করে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ৬ শতেরও বেশী অভিযুক্তের নাম ঠিকানা সম্বলিত এই তালিকা পরিকল্পিত খন্ড মালার ১ম খন্ড।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক বিভাগ এবং বিশেষ বিভাগ (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) ১৯৭২ সালের জানুয়ারী মাসে বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭২ (রাষ্ট্রপতির আদেশ নং-৮) জারী হবার পর থেকে ১৯৭৩ সালের নভেম্বর মাসে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত এই তালিকা প্রকাশ করে। এটি ছিল প্রকৃত প্রস্তাবে দালাল আইনে অভিযুক্তদের নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট আদালতে হাজির হবার সরকারী নোটিশ। সরকারের এ কথা বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বাংলাদেশ দালাল আইনের অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন এবং তিনি বিচার এড়ানোর জন্য আত্মগোপন করেছেন কিংবা বিদেশে অবস্থান করছেন--নোটিশে এ কথা উল্লেখ করে আদালতে হাজিরা দেবার নির্দেশ দেওয়া ছাড়াও এই নোটিশের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বনামে কিংবা বেনামে মালিকানাধীন যাবতীয় সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। বাংলাদেশ গেজেটে এই নোটিশ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। উল্লেখ্য, নোটিশ প্রাপ্তদের অধিকাংশকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল। অবশিষ্টরা আত্মগোপন করেছিল কিংবা দেশত্যাগ করেছিল।

অভিযুক্তদের মধ্যে কিছু সংখ্যকের, বিশেষতঃ নেতৃস্থানীয় দালালদের বিচার ও শাস্তি হলেও গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধের বিচারের জন্য সাধারণতঃ যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, দালাল আইনে তার সংস্থান না থাকায় স্বভাবতই এই শাস্তি ছিল অপরাধের গুরুত্বের তুলনায় অকিঞ্চিতকর। তবে নোটিশপ্রাপ্ত দালালদের কেউই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করতে পারেনি।
একই কারণে বিচারের পর আদালত কয়েকজনকে খালাস প্রদান করেছে। তদন্তের পর অনেককে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হয়নি, দূর্নীতি আর স্বজনপ্রীতি এর কারণ বলে ধারণা করা হয়। শেষ পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমার ফলে হাজার হাজার দালালদের অপরাধের তদন্ত বা বিচার কোনটিই হয়নি।

সরকারী নোটিশে যে ক্রমানুযায়ী অভিযুক্তদের নাম ছাপা হয়েছিল, এই তালিকাতেও সেই ক্রম রক্ষা করা হয়েছে। অনেক নেতৃস্থানীয় দালাল দালাল আইন জারীর আগেই গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় স্বভাবতই আলোচ্য তালিকায় তাদের নাম ওঠেনি। অত্যন্ত দ্রুততার সাথে বর্তমান গ্রন্থটি সংকলিত হওয়ায় এই দালালদের নাম প্রথম খন্ডে ছাপানো সম্ভব হল না। পরবর্তী খন্ডে এ’ধরনের দালালদের নাম ঠিকানা ও আদালতে হাজিরার সময় ও স্থান উল্লেখ করা ছাড়াও রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের দালালদের পূর্ণ তালিকা গ্রন্থবদ্ধ করা হবে, তালিকার ক্রমানুযায়ী প্রথম দিকে নাম ছাপা হয়নি বলেই কোন দালালের গুরুত্ব কম ছিল এমনটি ভাবার কোন হেতু নেই। এছাড়া দ্রুততার কারণে অভিযুক্ত প্রত্যেকের নামের পাশে তার বিচার হয়েছিল কিনা, বিচার হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে কোন কোন অপরাধের জন্য অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, কোন কোন অপরাধে কি কি শাস্তি হয়েছিল, কাকে কাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছিল, অভিযুক্তের বর্তমান অবস্থান ইত্যাদিসহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য তথ্যাদি সংযোজন করা সম্ভব হয়নি। আগামী সংস্করণে এই অসম্পূর্ণতা সংশোধন করা হবে তবে এই অসম্পূর্ণতা সত্ত্বেও তালিকাটির গুরুত্ব হ্রাস পাবে বলে আমার মনে হয়না, কারণ, দালাল আইনের অধীনে তদন্ত, বিচার ও শাস্তি কোনটিই প্রকৃত অপরাধীর কৃত অপরাধের গুরুত্বের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিলনা। এই অসম্পূর্ণতার কারণেই বর্তমান তালিকাটিকে দালাল তালিকা না বলে দালাল আইনে অভিযুক্তদের তালিকা বলতে হচ্ছে।

আমাদের মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশের প্রতিটি শহর ও গ্রামের জনসাধারণ যেন জানতে পারেন, একাত্তরের সেই ভয়াল দিনগুলিতে কাদের বিরুদ্ধে, কোন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে তারা লড়েছিলেন। আমার বিশ্বাস এই তালিকা থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তারা অন্ততঃ এদের রাজনৈতিক পুনর্বাসনকে প্রতিরোধ করবেন।

আর যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধাশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন নিশ্চয়ই এদের অপরাধের যথার্থ তদন্ত হবে। মানবতাবাদী সংস্থাগুলোর সহায়তাও নিশ্চিত ভাবেই আমরা সুনিশ্চিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে তা হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

পরিশেষে ভিন্ন আরেকটি বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই। মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের শ্লোগান ’মুক্তিসংগ্রাম চলছে, চলবে’--- অত্যন্ত তাৎপর্যবহ একটি বক্তব্য। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ স্বাধীনতা লাভের সাথে সাথে রাজনৈতিক মুক্তি লাভ করেছে, কিন্তু বাংলাদেশে ঘটেছে এ ক্ষেত্রে এক আশ্চর্য ব্যতিক্রম। বাংলাদেশে সংঘটিত নজীরবিহীন গণহত্যা সত্বেও স্বাধীনতা লাভের অর্ধযুগের মধ্যেই খুনী দালালরা রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করে বসে। আমাদের ইতিহাসের এই কলংকজনক অধ্যায় রচনায় রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতার সাথে সাথে বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর দায়ভাগও কম নয়। যদি স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর থেকেই দালালদের চিহ্নিত করে তাদের ঘৃণা কার্যকলাপকে গ্রন্থবদ্ধ করা হত, তা হলে কোন সরকারই সাহস পেতনা তাদের রাষ্ট্র ক্ষমতার ক্ষমতার উচ্চাসনে আসীন করতে। আজ যখন আমরা দালালদের পরিচয় উদঘাটনে সচেষ্ট হয়েছি, তখন সর্বপ্রথম আমাদের বুদ্ধিজীবী শ্রেণীকে এগিয়ে আসতে হবে, এ’বিষয়ে তাৎপর্যবহ গবেষণার জন্য। যথার্থ জনমত সৃষ্টি করা গেলে দালালদের রাজনৈতিক পুনর্বাসনকে প্রতিরোধ করা এমন কিছু কঠিন কাজ নয়।

নবীন লেখক হিসেবে এক্ষেত্রে আমার ক্ষমতায় সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আমি ওয়কিবহাল, তাই আমি অগ্রজ গবেষকদের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ রাখতে চাই, তাঁরা যেন এ’বিষয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতাকে নিয়োজিত করেন।

এ’বিষয়ে যে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা আছে, আমার স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে আমি সে বিষয়ে কয়েকটি কথা বলতে চাই, ভবিষ্যত গবেষকদের তা হয়ত কাজে লাগতে পারে।

দালালদের ভূমিকা ইতিহাসবদ্ধ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধাটি হল, জানা বিষয়কে মুদ্রিত আকারে প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজনীয় লিখিত দলিলের অপ্রাপ্যতা। দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায়, জিয়াউর রহমানের সিনিয়র মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়াকে দালাল আইনের অধীনে বিচার করে শান্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই তথ্যটিকে সমর্থন করার মত লিখিত দলিল পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তের পক্ষ সমর্থনকারী আইনজীবীর কাছ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে বলেই এটি উল্লেখ করা গেল, কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই তথ্য প্রদানকারী সূত্র হিসেবে তাঁর নাম ব্যবহার করতে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

অনেক সময় মুদ্রিত বিষয় এমনভাবে পাওয়া যায় যে, সেটিকে তথ্য হিসেবে উপস্থাপন করা ইতিহাস রচনার সাধারণ নীতিমালার অন্তর্ভূক্ত হয়না। উদাহরণ স্বরূপ, প্রাক্তন মন্তী আনোয়ার জাহিদের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। ’একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ রচনার পর আমাকে অনেকের কাছেই এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে যে, তাতে আনোয়ার জাহিদের নাম নেই কেন। সমালোচকদের মতে আনোয়ার জাহিদ একাত্তরে ক্যান্টনমেন্টে মুরগী সরবরাহ করতেন। জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধীনেত্রী শেখ হাসিনাও এই প্রসজ্ঞটি উল্লেখ করে তাঁকে বিদ্রুপ করেছেন। ’৭২ এর এপ্রিলে দৈনিক গণকন্ঠে ’দালাল আনোয়ার জাহিদকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন?’ এই শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছিল। এতে বলা হয়, আনোয়ার জাহিদ স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় একটি গুন্ডাবাহিনী তৈরী করে গ্রামের গরীব কৃষকদের কাছ থেকে মুরগী, সবজী, গরু ইত্যাদি জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে সরবরাহ করতেন। যদিও আনোয়ার জাহিদ এই লেখার প্রতিবাদ করেননি তবু এই লেখাটিকে গ্রন্থে পুনর্মুদ্রিত করার সময় শোভনীয়তা ও বস্তুনিষ্ঠতার প্রশ্ন দেখা দেয়। এই কারণেই ওই লেখাটির প্রসংগ প্রথম গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়নি। আনোয়ার জাহিদ অবশ্য ভাসানী ন্যাপের তৎকালীন সভাপতি মশিউর রহমান যাদু মিয়ার সাথে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সফররত পি পি পি নেতা মওলানা কাওসার নিয়াজীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এই খবরটি একাত্তরের সংবাদপত্রে মুদ্রিত হয়েছিল।

তৃতীয় যে অসুবিধাটি রয়েছে তা হল এই যে, অনেক সময় স্বাধীনতা বিরোধী ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তি পরবর্তীকালে এমন ভূমিকা গ্রহণ করেছেন যে তাঁর স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা দ্রন্থবদ্ধ করার ঔচিত্য সম্পর্কে দ্বিধাগ্রস্ত হতে হয়। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমীর কর্মকর্তা একজন প্রথিতথশা বুদ্ধিজীবীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করা যেতে পারে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি রাজশাহী বেতার কেন্দ্র থেকে ’শুভঙ্করের ফাঁকি’ নামে একটি ভিত্তিহীন ও আক্রমণাত্মক মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কথিকা পাঠ করতেন করতেন এবং দালালীর অভিযোগে তাঁকে নাকি গ্রেফতারও হতে হয়েছিল। অথচ তাঁর পরবর্তীকালের কার্যকলাপে তাঁকে স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তি বলে মনে হয়নি। তিনি এমন কি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয বুদ্ধিজীবী হত্যা তদন্ত কমিটির সদস্যও হয়েছিলেন।

এ সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করা গেলে দালালদের কর্মকান্ড সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য সমৃদ্ধ গ্রন্থ রচনা করা যেতে পারে। বস্তুতঃ একাত্তরের দালালদের ঘৃণ্য কার্যকলাপ সম্পর্কে যা কিছু জানা যায়, তার একটি অত্যন্ত অকিঞ্চিৎকর অংশমাত্র এ পর্যন্ত মূদ্রিত হয়েছে। আমি আশা করব, অগ্রজ গবেষকবৃন্দ এ বিষয়ে তাঁদের যোগ্যতাকে নিয়োজিত করবেন।

শফিক আহমেদ
১ ফাল্গুন, ১৩৯৪ বাং

কৃতজ্ঞতা

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আমার গত কয়েক বছরের তথ্যানুসন্ধানে অসংখ্য দেশপ্রেমিক ব্যক্তি অনুপ্রেরণা এবং তথ্য দিয়ে আমাকে সহায়তা করেছেন। একাত্তরের ঘাতক ও দালালদের তালিকা প্রণয়নের কাজে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া তাঁদের অনুপ্রেরণাই আমাকে সাহস যুগিয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা দানকারী অসংখ্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে যাদের নাম উল্লেখ না করলে নিজেকে অপরাধী বোধ করব তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববেদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের মুহম্মদ নাসিরউদ্দিন ডঃ সরদার মাহফুজুর রহমান, সালাউদ্দিন আহমেদ খান, ভাষা সৈনিক এডভোকেট গাজিউল হক, রাজনীতিবিদ আলেম মওলানা ওবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী এবং প্রবাসী কবি দাউদ হায়দার।
বিশিষ্ট বামপন্থী লেখক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায় আমার প্রত্যেকটি প্রচেষ্টার একাধারে অগ্রজ এবং পরামর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর প্রতি আমি কথামালায় কৃতজ্ঞতা জানাতে চাইনা।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আমার লেখালেখিতে বয়োজ্যেষ্ঠ, প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের চেয়ে আমি সর্বদাই অধিকতর অনুপ্রেরণাও উৎসাহ পেয়েছি আমার তরুণ শুভার্থীদের কাছ থেকে। এই তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়ে প্রশংসনীয় রকম আগ্রহশীল। বর্তমান গ্রন্থটি সম্পাদনার ক্ষেত্রে আমি আমার বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান হেলালের কাছ থেকে পেরেছি নিঃস্বার্থ সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা। একইভাবে আমার বন্ধু হাসনাত ফাতিমা যে সহযোগিতা প্রদান করেছেন, সে জন্যে তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। গ্রন্থটি সম্পাদনার কাজে আমার তরুণ শুভার্থীদ্বয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহবুবুর রহমান টিটো এবং তৌহীদ সিরাজ যে নিঃস্বার্থ পরিশ্রম করেছেন তাতে তাদেরকেএই গ্রন্থের যৌথ সম্পাদক বললেও অত্যুক্তি হবে না। একইভাবে শামসুল হক চন্দনও তাঁর সহযোগিতা দিয়ে আমাকে বাধিত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়ে এই তরুণ কর্মীদের আগ্রহে আমার স্থির প্রতীতি জন্মেছে যে, তারা এ বিষয়ে মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করে সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।

বর্তমান গ্রন্থের প্রস্তাবনাটি রচনায় ১৯৭২ সালের দৈনিক বাংলায় প্রকশিত শীলব্রত চৌধুরীর একটি নিবন্ধের সহায়তা নেয়া হয়েছে। তাঁর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের উদ্যোগে গ্র্রন্থটি প্রকাশিত হচ্ছে বলে তাঁদের প্রতি নতুন করে কৃতজ্ঞতা জানানোর কোন অবকাশ নেই। তবু, পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল (অবঃ) শওকত আলী বইটি প্রকশে যে আগ্রহ দেখিয়েছেন, সে কারণে তাঁর নামটি বিশেষভাবে উল্লেখ না করলেই নয়। পরিষদের জাতীয় কমিটির সদস্য সাংবাদিক মহসিন খায়রুল আনাম একাজে নিজেকে সবচেয়ে আত্মনিবেদিত কর্মী হিসেবে প্রমাণ করেছেন। একইভাবে পরিষদের জাতীয় কমিটির সম্পাদক খন্দকার হেদায়েতুল ইসলাম কাজলও নিঃস্বার্থ পরিশ্রম করেছেন। সংহতি পরিষদের অন্যান্য যে সব সদস্য নিঃস্বার্থ পরিশ্রম করেছেন, তাতে সংগঠনের আদর্শ ও উদ্দেশ্যের প্রতি তঁদের প্রশ্নাতীত আন্তরিকতারই প্রতিফলন ঘটেছে।